Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

পারিবারিক পর্যায়ে ফল সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ

বিভিন্ন ধরনের ফল বিভিন্ন সময়ে পাওয়া যায়।  যেমন বাংলাদেশে গ্রীষ্মকালে অধিক পরিমাণে ফল পাওয়া যায়।  ফল প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সংরক্ষণের মাধ্যমে ফল সংরক্ষণ করতে পারলে সারা বছরই ফলের চাহিদা পূরণের মাধ্যমে পুষ্টি চাহিদা মেটানো সম্ভব। ফল দ্রুত পচনশীল হওয়ায় বিভিন্ন কারণে আমাদের দেশে ২০-৫০% নষ্ট হয়ে যায়। কোন কোন ক্ষেত্রে ১০০% ফল নষ্ট হয়ে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে যায়। তাই ফল সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ফল সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ বলতে বুঝায় বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করে ফল বিভিন্ন অপচয় ও নষ্ট হওয়া থেকে রক্ষা করে ফলের পুষ্টি গুণাগুণ বজায় রেখে তা সংরক্ষণের সময় বৃদ্ধি করা। প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে সংরক্ষণের ক্ষেত্রে ফলের আকৃতি, প্রকৃতি, অবয়ব ও পারিপার্শ্বিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটানো হয়। প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সংরক্ষণে ফলের গুণগত কোনো পরিবর্তন ঘটে না, শুধু আকৃতি ও প্রকৃতিতে পরিবর্তন ঘটিয়ে ভৌত ও রাসায়নিক পদ্ধতি প্রয়োগের মাধ্যমে ফল সংরক্ষণ করা হয়।
 

যে সকল কারণে ফল নষ্ট হয়ে যায়
মেটাবলিক পরিবর্তন, জলীয় অংশ কমে যাওয়া, অভ্যন্তরীণ বিপর্যয়, তোলার সময় বা পরে আঘাতজনিত ক্ষত, সঠিক পদ্ধতি না মেনে ফল পরিবহন ও সংরক্ষণ করা, রোগ ও পোকামাকড়ের আক্রমণ (মোল্ড, ইস্ট, ব্যাকটেরিয়া)।
উল্লিখিত কারণগুলো রোধ করা হয় ফল সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে।

 

ফলসংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণের উদ্দেশ্য
১. ফলের অপচয় রোধ ও সংরক্ষণ সময় বৃদ্ধি করা।
২.  পুষ্টি ও গুণগত মান বজায় রাখা।
৩.  অর্থনৈতিক অপচয় রোধ ও ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করার মাধ্যমে উৎপাদনকে লাভজনক করা।
৫.  আমদানি হ্রাসের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়।
৬. মূল্য সংযোজন করার মাধ্যমে উচ্চমূল্যের পণ্য তৈরি করা।
৮. কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার মাধ্যমে পারিবারিক আয় বৃদ্ধি করা।
১০. অমৌসুমে ফলের প্রাপ্তি ও গ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি করে মূল্য সংযোজন করা।
১১. সরবরাহ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে বাজারে ফলের মূল্য স্থিতিশীল রাখা।

 

ফল সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ পদ্ধতি : স্বল্প ব্যয়ে ও পরিসরে পারিবারিক পর্যায়ে কিছু ফলের সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ পদ্ধতিতে ফলকে আমরা ছয় মাস থেকে তিন বছর পর্যন্ত সংরক্ষণ করতে পারি।
 

ক্যানিং বা টিনজাত করে সংরক্ষণ : আম, আনারস, লিচু প্রভৃতি ফলকে টিনজাত করে রাখা যায়। প্রথমে ফলকে স্টেরিলাইজড বা পাস্তুরীকরণ করে নেয়া হয় এবং ফুড প্রিজারভেটিভ যোগ করে  সুবিধামতো আকারের পাত্রে সংরক্ষণ করা হয়। পাত্রটিকেও স্টেরিলাইজড করে নিতে হবে এবং ফল রাখার পর বায়ুরোধী করে রাখতে হবে। টিনজাত করার পর ডিপ ফ্রিজেও রাখা যায়।


রস হিসেবে ফল সংরক্ষণ : যে কোন রসালো ফল থেকে রস তৈরি করা যায়। ফলের রস সংরক্ষণ করতে হলে টিনের কৌটায় ভরে দ্রুত পাস্তুরীকরণ করে অথবা ৭৫০-৮৫০ সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় কৌটা সিদ্ধ করে রাখতে হয়। কৌটা অবশ্যই বায়ুরোধী করে রাখতে হবে। অন্যথায় রস নষ্ট হয়ে যাবে। রসের সাথে খাদ্য সংরক্ষণকারী রাসায়নিক সংরক্ষক দ্রব্য যোগ করতে হবে। বাড়িতে রস তৈরি করে বোতলে রাখা যেতে পারে। কিন্তু তাতে সংরক্ষণের নিশ্চয়তা থাকে না। ফলের রসের সাথে চিনি বা সিরাপ মিশিয়ে স্কোয়াশ, ফ্রুট-সিরাপ ও কর্ডিয়াল তৈরি করা হয়। রসে যদি ফলের টুকরা না থাকে তখন তাকে কর্ডিয়াল বলা হয়। স্কোয়াশে কমপক্ষে ১০% ফলের রস থাকতে হবে। ভালো স্কোয়াশে ২৫% পর্যন্ত ফলের রস থাকে।


শুকিয়ে ফল সংরক্ষণ : এমন অনেক ফল আছে যেগুলোকে শুকিয়ে অনেক দিন পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যায়। জলবায়ু শুষ্ক থাকলে রোদেও শুকানো যায়। তাছাড়া ওভেন বা ডিহাইড্রেটর যন্ত্রের সাহায্যে খুব সহজেই শুকানো কাজ সম্পন্ন করা যায়। এ প্রক্রিয়াকে ডিহাইড্রেশন বলে। এ প্রক্রিয়ায় সব ফলকে শুকানো যায় না। কারণ কোন কোন ফলের বুনট, গঠন, বর্ণ ও খাদ্যাংশের এত পরিবর্তন ঘটে যে খাদ্য হিসেবে প্রায় অনুপযোগী হয়ে পড়ে। ফলের মধ্যে সাধারণত কুল, আঙ্গুর (কিসমিস), খুবানী (ধঢ়ৎরপড়ঃ), ডুমুর, নাসপাতি ও খেজুর শুকিয়ে সংরক্ষণ করা হয়। রোদে শুকাতে হলে এনজাইমের কার্যকারিতা নষ্ট করে দেওয়ার জন্য শুকানোর পূর্বে ফলকে ফুটন্ত পানিতে কয়েক মিনিট সিদ্ধ করে নিতে হবে। অন্যথায় শুকানোর সময় ফল বিবর্ণ হয়ে যায়। মেশিনে শুকালে সিদ্ধ করতে হবে না। আমাদের দেশে প্রায় সারাবছরই বাতাসের আর্দ্রতা অনেক বেশি থাকে বিধায় ভালোভাবে ফল শুকানো যায় না। শুকানোর পর বায়ুরোধী পাত্রে বা পলিথিনের ব্যাগে ফল সংরক্ষণ করতে হবে।


চিনির দ্রবণে ফল সংরক্ষণ : চিনির দ্রবণে সংরক্ষণ করলে ফলের স্বাদ ও সুগন্ধ বৃদ্ধি পায়। সাধারণত আনারস, লিচু, পিচ, আম, পেঁপে, কমলা, আঙ্গুর, নাসপাতি, মাল্টা প্রভৃতি এভাবে সরংক্ষণ করা যায়। একাধিক ফল একসাথে সংরক্ষণ করে ফ্রুট ককটেল তৈরি করা যায়। কোন কোন সময় চিনির দ্রবণে গ্লুকোজ যোগ করা হয়। ফল সংরক্ষণের জন্য সিরাপের ঘনত্ব কমপক্ষে ৬০% হতে হবে। সাধারণত প্রতি কেজি ফলের জন্য ০.২৫ কেজি চিনি দরকার হয়। তবে ফলের মিষ্টতা অনুযায়ী এর কম বেশিও হতে পারে। সংরক্ষণের জন্য প্রথমে পাকা ফল সুবিধামতো টুকরা ও পরিষ্কার করে নিয়ে পাতলা সিরাপের সাথে জ্বাল দিয়ে সিরাপের ঘনত্ব ৬৫-৭৫% করতে হবে। সিদ্ধ করার সময় ফলের টুকরা যেন গলে না যায় সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। ছোট আকারের ফল যথা লিচু, চেরি, কমলার কোয়া ইত্যাদি আস্ত ব্যবহার করতে হবে। ঠিকমতো সিদ্ধ করার পর ফল ও সিরাপ টিনে রেখে বায়ুরোধী ছিপি দ্বারা ভালোভাবে বন্ধ করে রাখতে হবে।


চিনির সিরার প্রলেপ দিয়ে ফল সংরক্ষণ : আম, আনারস এবং কাঁঠাল এর স্ল­াইস করে ৩০-৪০% চিনির দ্রবণের প্রলেপ দিয়ে প্রায় ১ বছর সংরক্ষণ করা যায়।
 

লবণের দ্রবণে সবুজ ফল সংরক্ষণ : এই পদ্ধতিতে কাঁচা আম, আমড়া ও জলপাই ৬-৮ মাস ভলো অবস্থায় সংরক্ষণ করা যায় এবং পরে আচার ও চাটনি তৈরিতে ব্যবহার করা যায়। এই পদ্ধতিতে ফল সংরক্ষণ করতে প্রথমে পরিপুষ্ট কাঁচা ফল পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে নিতে হবে। তারপর  ফলের আকার অনুযায়ী  দুই বা চার টুকরায় কেটে নিতে হবে এবং ছোট হলে গোটা ফল নেওয়া যায়। ফলগুলো ৬০-৮০০ সে. তাপমাত্রায়  ২-৩ মিনিট ব্লাঞ্চিং করতে হবে এবং ফলগুলো ঠাণ্ডা পানিতে ১০ মিনিট ডুবিয়ে রাখতে হবে। শতকরা ১০ ভাগ লবণের দ্রবণ তৈরি করে ১০ মিনিট ফুটিয়ে নিতে হবে ও ওজন করা অ্যাসিটিক এসিড এবং কেএমএস যোগ করতে হবে। প্লাস্টিক ড্রাম/কনটেইনার ভালোভাবে পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে এবং পরে গরম (৮০-৯০০ সে. তাপমাত্রায় পানি) পানিতে জীবাণুমুক্ত করতে হবে। তারপর ফল/ফলের টুকরো পরিষ্কার এবং জীবাণুমুক্ত ড্রাম এবং কনটেইনারে রেখে লবণের দ্রবণ যোগ করতে হবে। এবার পাত্রের  মুখে ঢাকনা লাগিয়ে দিয়ে সংযোগস্থলের উপর দিয়ে আঠাযুক্ত টেপ বা  মোম  গলিয়ে ভালোভাবে লাগিয়ে দিতে হবে যাতে পাত্রটি  সম্পূর্ণরূপে বাযুরোধী হয়। পাত্রগুলো পরিষ্কার জায়গায় স্বাভাবিক তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করতে হবে। ব্যবহারের পূর্বে দ্রবণে সংরক্ষিত ফল/ফলের টুকরাগুলো পানিতে ধুয়ে গরম পানিতে ডুবিয়ে ৩ মিনিট হালকাভাবে নাড়াচাড়া করতে হবে।


আচার তৈরির মাধ্যমে ফল সংরক্ষণ : আচার অত্যন্ত  সুস্বাদু ও মুখরোচক খাবার। সকল শ্রেণির মানুষের কাছেই আচার খুব লোভনীয় ও আকর্ষণীয় খাবার হিসেবে পরিচিত। যে ফল বা সবজি থেকে আচার তৈরি করা হয় তার উপর আচারের পুষ্টিমান নির্ভর করে। আচারে বিভিন্ন ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থ থাকে, যা আমাদের শরীরের জন্য প্রয়োজন। আচার খাবারে স্বাদ  বৃদ্ধি করে। আচারে তেল বা স্নেহ জাতীয় পদার্থ থাকে, যা তাপ শক্তি উৎপাদনে সাহায্য করে। যথাযথ নিয়মে তৈরি করলে ফলের প্রায় সব গুণই আচারে অক্ষুণ্ন থাকে।
 

মিশ্রফলের শুকনো পাল্প : কাঁঠাল, আনারস ও আমের পাল্প ২৫:২৮:৭৫ অনুপাতে মিশিয়ে পাতলা শিটের মতো করে কোন পাত্রে রেখে ভালো করে শুকিয়ে নিতে হবে এবং পলিথিনে মুড়িয়ে সংরক্ষণ করতে হবে। এক্ষেত্রে যাতে ধুলাবালু না পড়ে সেজন্য সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।


জ্যাম ও জেলি তৈরির মাধ্যমে ফল সংরক্ষণ : ফলের পাল্প নিয়ে যখন সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ করা হয় তখন সেটি জ্যাম এবং ফলের থেকে পরিশ্রুত রস নিয়ে যখন প্রক্রিয়াজাতকরণ করা হয় তখন তাকে জেলি বলে।    
 

ফলের প্রক্রিয়াজাতকরণ জনপ্রিয় কিছু ফল হতে জ্যাম ও জেলি তৈরির পদ্ধতি
 

পেয়ারার জেলি : ভিটামিন সি সমৃদ্ধ দেশি পেয়ারা জেলি তৈরির জন্য খুবই উপযোগী। পরিপুষ্ট কিন্তু বেশি পাকা নয় এমন পেয়ারাগুলো জেলির জন্য বাছাই করে পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে নেওয়া হয়। ফলগুলো টুকরো টুকরো করে কেটে সমপরিমাণ পানিতে সিদ্ধ করা হয়। তারপর পাতলা কাপড় দিয়ে ছেঁকে রস আলাদা করে নেওয়া হয়।


জেলি তৈরির জন্য ১ কেজি রসের সাথে ৬৫০ গ্রাম চিনি, ৭ গ্রাম সাইট্রিক এসিড এবং ০.৭৫ গ্রাম সোডিয়াম বেনজয়েট প্রয়োজন হয়। রসের সাথে চিনি মিশিয়ে জ্বাল দেওয়া হয়। মিশ্রণটি মোটামুটি গাঢ় হয়ে আসলে রিফ্রাক্টোমিটার যন্ত্র দিয়ে পরীক্ষা করা হয় এবং মিশ্রণটিকে ৬৫% টিএসএস পর্যন্ত রান্না করা হয়। রিফ্রাক্টোমিটারের অনুপস্থিতিতে শিটিং পরীক্ষার মাধ্যমে জেলি হয়ে যাওয়ার চূড়ান্ত অবস্থা নির্ণয় করা সম্ভব। মিশ্রণটি মোটামুটি গাঢ়ত্বে আসলে শিটিং পরীক্ষা করা হয়। টিএসএস ৬৪% হলে সাইট্রিক এসিড যোগ করা হয় এবং সামান্য জ্বাল দিয়ে পানিতে সোডিয়াম বেনজয়েট গলিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে দিয়ে চুলা থেকে নামিয়ে ফেলা হয়। জেলি জীবাণুুমুক্ত বোতলে ঢেলে ছিপি এঁটে দেওয়া হয়। ঠা-া হওয়ার পর জেলির উপরে মোম গলিয়ে দেওয়া হয়।


আমড়ার জেলি : দেশজ এই ফলটি প্রক্রিয়াজাত করে নানা ধরনের খাদ্যদ্রব্য প্রস্তুত করা যায়। আমড়া দিয়ে খুবই উন্নতমানের জেলি প্রস্তুত করা সম্ভব। আমড়াগুলো পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে কেটে টুকরো করে সামান্য পরিমাণ সিদ্ধ করা হয়। সিদ্ধ করার সময় কাঠের হাতল দিয়ে টুকরাগুলো নাড়াচাড়া করা হয়। পাতলা কাপড়ে ছেঁকে রস আলাদা করে নেওয়া হয়। জেলি তৈরির জন্য ১ কেজি রসের সাথে ৭০০ গ্রাম চিনি, ৬ গ্রাম সাইট্রিক এসিড, ০.৮ গ্রাম সোডিয়াম বেনজয়েট দরকার। রসের সাথে চিনি যোগ করে জ্বাল দেওয়া হয়। রান্নার মাঝামাঝি পর্যায়ে পেকটিন যোগ করা হয়। কাক্সিক্ষত গাঢ়ত্বে না আসা পর্যন্ত রান্না চালিয়ে যাওয়া হয়। আমড়ার জেলি তৈরির পরবর্তী ধাপগুলো পেয়ারার জেলি তৈরির অনুরূপ।


আনারসের জেলি : গ্রীষ্মকালে এ ফলের প্রাপ্র্যতা অনেক বেশি। আনারসের জেলি তৈরির জন্য আনারস কুচি একটি, চিনি দুই কাপ, ফুড কালার সামান্য, পানি আধা কাপ ও লেবুর রস এক চা চামচ প্রয়োজন। প্রথমে একটি ব্লেন্ডারে আনারস কুচির সঙ্গে আধা কাপ পানি মিশিয়ে ভালো করে ব্লে­ন্ড করতে হবে। এবার ঘন মিশ্রণটি একটি প্যানে নিয়ে ১০ মিনিট নাড়তে হবে।
এখন এতে চিনি দিয়ে আরো ২০ থেকে ৩০ মিনিট নাড়তে হবে। এবার এতে ফুড কালার (হলুদ) ও লেবুর রস দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে। ঘন হয়ে এলে একটি বোতলে ভরে ঠা-া করে ফ্রিজে রেখে দিলে তৈরি হবে আনারসের জ্যাম।


আনারস জ্যাম : আনারসের পাল্প ৩ কাপ, অ্যাগার অ্যাগার দেড় চা-চামচ, সাইট্রিক অ্যাসিড আধা চা-চামচ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, চিনি সাড়ে তিন কাপ, সোডিয়াম বেনজয়েট সিকি চা-চামচ, আনারস এসেন্স ১ চা-চামচ, লবণ আধা চা-চামচ।


আনারস দুই ভাগ করে কাঁটা চামচ দিয়ে কেচে নিতে হয় অথবা ব্লে­ন্ড করে নিতে হবে। এবার চিনিসহ চুলায় সেদ্ধ করতে হবে।  এরপর এর সঙ্গে আদা ও লবণ দিয়ে মিশ্রিত করতে হবে। অ্যাগার অ্যাগার গরম পানি দিয়ে ১০ মিনিট ভিজিয়ে আনারসের মিশ্রণে ঢেলে দিতে হবে। আনারস যখন ঘন থকথকে হয়ে আসবে, তখন চুলা থেকে নামিয়ে সোডিয়াম বেনজোয়েট, সাইট্রিক অ্যাসিড ও পাইনঅ্যাপল এসেন্স দিয়ে মিশিয়ে দিতে হবে। এবার নামিয়ে বয়ামে ঢেলে সংরক্ষণ করতে হবে।


মিশ্রফলের জ্যাম : দেশীয় বিভিন্ন ফলের সংমিশ্রণে উন্নতমানের জ্যাম তৈরি করা যায়। পেয়ারা ও আমড়া ধুয়ে কেটে টুকরো করে সমপরিমাণ পানিতে আধ ঘণ্টা ফুটানো হয়। পরে তা ঠা-া করে নিয়ে মশারির কাপড়ে ছেঁকে পাল্প বা ম- আলাদা করে নেওয়া হয়। পাকা পেঁপের খোসা ছাড়িয়ে পেঁপের ওজনের অর্ধেক পরিমাণ পানি মিশিয়ে ও জ্বাল দিয়ে পাল্প তৈরি করা হয়। মিশ্র ফলের জ্যাম প্রস্তুত করতে উপকরণের অনুপাত হবে;  পেয়ারার পাল্প ১ কেজি, আমড়ার পাল্প ১ কেজি, পেঁপের পাল্প ১ কেজি, চিনি ২.৫ কেজি, সাইট্রিক এসিড ২৫ গ্রাম এবং সোডিয়াম বেনজয়েট ৩ গ্রাম।


ফলের পাল্পসমূহ একত্রে মিশিয়ে তার সাথে চিনি যোগ করে জ্বাল দেওয়া হয়। কাক্সিক্ষত গাঢ়ত্বে না আসা পর্যন্ত রান্না চালিয়ে যেতে হয়। মিশ্রণটি মোটামুটি গাঢ়ত্বে এলে শিটিং পরীক্ষা করা হয় এবং তালের জ্যাম তৈরির পদ্ধতির ন্যায় পরবর্তী ধাপগুলো সম্পন্ন করে এই জ্যাম প্রস্তুত করা হয়।


তালের জ্যাম : তাল থেকে উৎকৃষ্ট মানের জ্যাম তৈরি করা যায়। পাকা তাল থেকে আঁটি আলাদা করে নিয়ে আঁটির ওজনের এক-তৃতীয়াংশ পানি যোগ করে চটকিয়ে মণ্ড তৈরি করা হয়। তালের জ্যাম তৈরির জন্য ১ কেজি মণ্ডের সাথে ১ কেজি চিনি, ১১.৫ গ্রাম পেকটিন, ১২.৫ গ্রাম সাইট্রিক এসিড এবং ১ গ্রাম সোডিয়াম বেনজয়েট প্রয়োজন হয়।


মণ্ডের সাথে চিনি যোগ করে জ্বাল দেওয়া হয়। রান্নার মাঝামাঝি পর্যায়ে পেকটিন যোগ করা হয় এবং কাক্সিক্ষত গাঢ়ত্বে না আসা পর্যন্ত রান্না চালিয়ে যেতে হয়। মিশ্রণটি মোটামুটি কাক্সিক্ষত গাঢ়ত্বে এলে শিটিং পরীক্ষা করা হয়। শিটিং পরীক্ষার পদ্ধতি হলো-মিশ্রণের মধ্যে চামচ ডুবানো এবং ঠাণ্ডা করে চামচ বেয়ে মিশ্রণটিকে পড়তে দেওয়া। যদি এটা একাধারে না পড়ে শিটের আকারে পড়তে থাকে তাহলে বুঝতে হবে জ্যাম তৈরি হয়ে গেছে। শিটিং পরীক্ষায় জ্যাম প্রস্তুত হওয়ার কাছাকাছি বুঝা গেলে সাইট্রিক এসিড পাউডার ক্ষীণধারে মিশ্রণের সাথে যোগ করে সামান্য একটু জ্বাল দেওয়া হয়। তারপর অল্প পরিমাণ পানিতে সোডিয়াম বেনজয়েট যোগ করে চুলা থেকে নামানো হয়। জ্যাম জীবাণুমুক্ত বোতলে ঢেলে ছিপি এঁটে দেওয়া হয়। ঠাণ্ডা হওয়ার পর বোতলের ওপরে মোম গলিয়ে দেওয়া হয়।
ফল ও সবজি প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে আমরা এর অপচয় রোধ করে অধিক মানুষের পুষ্টি সংরক্ষণে অবদান রাখতে পারি এবং সুখী ও সমৃদ্ধশালী দেশ গঠনে ভূমিকা রাখতে পারি।

 

চন্ডী দাস কু-১  শাহ্ মোহাঃ আকরামুল হক২
মো. আহসানুল হক চৌধুরী৩

১পরিচালক, ২অতিরিক্ত পরিচালক, ৩অতিরিক্ত উপপরিচালক হর্টিকালচার উইং, ডিএই, খামারবাড়ি, ঢাকা। মোবাইল : ০১৭১৬৪৮৯৯১৯, ই-মেইল : dhw@dae.gov.bd


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon